তিনাপ সাইতার, বান্দরবন

প্রথমে বলে নিচ্ছি ছবিতে সুন্দর দেখলে আবেগে যাব যাব বলে দৌড় দিবেন না। নিজেকে প্রস্তুত করুন তারপর চিন্তা করুন আপনি পারবেন কি পারবেন না, যাবেন কি যাবেন না..
ঢাকা টু বান্দরবন -৳৬২০টাকা(নন এসি)
বান্দরবন টু রোয়াংছড়ি -বাস ৳৬০ অথবা
রিজার্ভ গাড়ি(১৫০০-২০০০) টাকা।
এবার হচ্ছে আসল খেলা 
গাইড ঠিক করে আর্মি কেম্প থেকে অনুমতি নিয়ে রনিনপাড়া হয়ে তিনাপ যাত্রা শুরু করতে হবে।
গাইড খরচ প্রতিদিন ৳ ১০০০ টাকা।
(অনুমতি নেওয়ার জন্য আপনার আইডি কার্ড এবং ঠিকানা,ফ্যামিলি ফোন নাম্বার দিতে হবে) এবং আপনাকে যে প্রক্রিয়া গুলো অনুসরণ করতে বলবে সেভাবে যেতে হবে)
এই সিজনে রাস্তা ভালো নেই..জীপ যাওয়া খুব কষ্টকর। জীপ না পেলে আপনাকে সারাদিন হাটার জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে কমপক্ষে ৫ ঘন্টা। (যার যার হাটার উপর নির্ভরশীল)

শুরুতে ২০ মিনিট বোটে করে গেলে আপনাকে আরোও ১ ঘন্টা কম হাটতে হবে।
বোট খরচ পড়বে জনপ্রতি ৳১০০ টাকা।
তারপর ছোট বড় কয়েকটা পাহাড় টপকাতে হবে।
বৃষ্টি হলে খুব পিচ্ছিল।
আনুমানিক ২ ঘন্টার হেটে গেলে পাইক্ষং পাড়া দেখতে পারবেন। অপ্ল কয়েকটা দোকান পাবেন রেস্ট নেওয়ার জন্য।
তারপর আবার পাহাড়ী সমতল পথ ধরে হাটা । একটু উঁচু নিচু কিন্তু সহজ। পাড়া এবং আশেপাশে পাহাড় মেঘের খেলা খুব সুন্দর যা মনের সাথে শরিরের ক্লান্তি জুড়াবে।
আনুমানিক ২ ঘন্টা হাটার পর একটা যাত্রী ছাউনি দেখতে পারবেন..
যাত্রী ছাউনি থেকে আর্মি কেম্প এবং রনিন পাড়া দেখা যাবে খুব কাছে কিন্তু আসলে খুব একটা কাছে নয়।
ছাউনি থেকে খুব খাড়া পাহাড় বেয়ে নিচে নামতে হবে
আর্মি কেম্পে পৌচাতে ১ ঘন্টার মত সময় লাগবে।
আর্মি কেম্পে আবার সব পরিচয় পর্ব সেরে রনিনপাড়ায় যেতে হবে।
রনিন পাড়া অনেক বড়। থাকা এবং খাওয়ার জন্য সবচেয়ে সুবিদা এখানে।
থাকা- ৳১৫০ টাকা জনপ্রতি।
খাবারের জন্য আগেই অর্ডার করে নিতে হয়।
এই সিজনে গেলে অনেক ফল পাবেন আনারস, আম, কাঠাল, জাম অনেক কম মুল্যে পাবেন।
রনিন পাড়ায় প্রথম দিন থেকে পরের দিন তিনাপ যাওয়া সব থেকে ভালো।
রোয়াংছড়ি থেকে যদি সরারসি জীপ যাত্রী ছাউনি পযন্ত আসে তাহলে প্রথম দিনেই তিনাপ যাওয়া সম্ভব।
রনিন পাড়া থেকে আঁকাবাঁকা উচু নিচু পাহাড় কয়েকটা পাহাড় ও ঝিরিপথ বাঁশঝাড় দিয়ে তিনাপ যেতে হবে... সময় লাগবে তিন(৩) ঘণ্টা। ফিরে আসতে একই সময় লাগবে। বৃষ্টি হলে খুবই মারাত্মক পিচ্ছিল পথ, সাথে জোকের আক্রমণ তো আছেই.. আছাড় খাওয়া ফ্রি।
তারপর সেই মন মুগ্ধকর কষ্ট জুড়ানো বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জলপ্রপাত তিনাপ সাইতার।
ঝর্ণার আশেপাশে অনেক বড় বড় পাথর আছে অনেক পিচ্ছিল। খুবই সাবধানে পা পেলতে হয়।

তিনাপ হচ্ছে হার্ড ট্রেকিং এর জন্য উপযুক্ত। মনের প্রবল ইচ্ছে আর শরিরের কসরত পোড়াতে পারবেন তারা যাবেন। অনেকে দেখলাম একটু পথ গিয়েই বলে আমি যাবনা, আবার অনেকে রনিন পাড়া পযন্ত গিয়ে আর তিনাপের নাম নেয় নি।
আপনি নিজেকে উপযুক্ত মনে করে যাবেন কারোও কথায় না যাওয়া ই ভালো। আর যদি নিজেকে প্রমানের জন্য যাচ্ছেন তাহলে ভিন্ন কথা। হাটা এবং ট্রেকিং এর ব্যাপার সম্পুর্ন যার যার উপর নির্ভরশীল কারও আরোও কম অথবা বেশী লাগতে পারে।
কি কি নেওয়া প্রয়োজন :-
১।ব্যাক্তিগত ঔসধ, মশা ও জোকের প্রতিষেধক।
২।কম পাতলা জামা কাপড়, ছাতা অথবা রেইনকোট।
৩। পানি ও শুকনো খাবার।
প্রত্যেক ভ্রমনে আমরা সবাই কিছু না কিছু ময়লা আবর্জনা ফেলি, নষ্ট করি পরিবেশ। যা কখনো কাম্য নয়। প্লাস্টিকজাত দ্রব্য যত কম ব্যাবহার করা যায় ততই ভালো।পচনশীল কাগজের পেকেট ব্যাবহার করা উচিৎ বেশী বেশী।
পরিবেশ আমাদের অনেক কিছুই দিচ্ছে, সর্বোপরি আমারা যে পরিবেশ দেখতে যাচ্ছি সে পরিবেশ যাতে কোন ভাবেই যাতে নষ্ট না হয় সেদিকে সবাইকে খেয়াল করা উচিৎ।
নাম ও বানানের ভুল ক্ষমা সুন্দরভাবে দেখবেন। ধন্যবাদ ।

Comments

Popular Posts